
Category: কৃষি


রংপুরে কৃষি প্রণোদনায় রেকর্ড ৪ লাখ কৃষক পাচ্ছেন ২৩৭ কোটি টাকার উপকরণ
প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তা ও রবি মৌসুমে ফসল উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে রংপুর অঞ্চলে ২৩৭ কোটি ৫০ লাখ ৬৮ হাজার ৩০০ টাকা মূল্যের কৃষি উপকরণ বিতরণ করবে সরকার, যা স্মরণকালের সর্বোচ্চ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ অঞ্চলে সর্বোচ্চ ১২ কোটি ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ৪৬০ টাকা প্রণোদনা দেয়া হয়। যদিও ওই সময় প্রণোদনা দেয়া হয়েছিল রবি ও খরিপ মৌসুমের জন্য। এর আওতায় ৯০ হাজার ৪৪০ জন কৃষকের মধ্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হয়। সে হিসাবে চলতি রবি মৌসুমে প্রণোদনার পরিমাণ আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি। চলতি বছরের সহায়তা পর্যায়ক্রমে ৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৫৬ জন প্রান্তিক এবং ক্ষুদ্র কৃষকের মধ্যে বিতরণ করা হবে। এছাড়া এবারই প্রথম পেঁয়াজ আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে রংপুর জেলার কৃষকদের সহায়তা দেয়া হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে এ সহায়তা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এতে কৃষিকাজে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। এ বছর কয়েক দফা বন্যায় বেশকিছু জমির আমন ধানসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়। পাশাপাশি নভেল করোনাভাইরাসের কারণেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষক। তাই চলতি রবি মৌসুমে ফসলের উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয় এবং কৃষকরা নিরবচ্ছিন্নভাবে চাষাবাদ চালিয়ে যেতে পারেন, এজন্য কৃষি বিভাগ প্রণোদনা ও পুনর্বাসন কর্মসূচির মাধ্যমে বিনা মূল্যে বীজ এবং সার বিতরণের কার্যক্রম শুরু করেছে। রংপুর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় মোট ২৩৭ কোটি ৫০ লাখ ৬৮ হাজার ৩০০ টাকা মূল্যের বিভিন্ন কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হবে। এর মধ্যে ৯ কোটি ৩৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের বোরো হাইব্রিড বীজ রয়েছে, যা ১ লাখ ৮৫ হাজার কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। রংপুর জেলায় ৫০ হাজার কৃষক, গাইবান্ধায় ৪০ হাজার, কুড়িগ্রামে ৩৫ হাজার, লালমনিরহাটে ২৫ হাজার ও নীলফামারীতে ৩৫ হাজার কৃষকের মধ্যে এক বিঘা জমির জন্য দুই কেজি করে হাইব্রিড বীজ বিতরণ করা হবে। এদিকে পুনর্বাসন কর্মসূচিতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১১৯ কোটি ৮ লাখ ৩২ হাজার ২০০ টাকা। মূলত আটটি ফসল (গম, সরিষা, সূর্যমুখী, চীনাবাদাম, মসুর, খেসারি, টমেটো ও মরিচ) আবাদের জন্য এ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে রংপুরের পাঁচ জেলার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ জন নির্বাচিত কৃষককে বীজ ও সার সহায়তা দেয়া হবে। এরই মধ্যে প্রায় ৭০ হাজার ২৪৫ জন কৃষককে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রণোদনা কর্মসূচিতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১০৯ কোটি ২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। নয়টি ফসল (বোরো উফশী, গম, ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমুখী, চীনাবাদাম, শীতকালীন মুগ, গ্রীষ্মকালীন মুগ ও পিয়াজ) আবাদের জন্য রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলার ৮৯ হাজার ৯০০ জন নির্বাচিত কৃষকের মধ্যে এসব উপকরণ বিতরণ করা হবে। এখন পর্যন্ত ৫৬ হাজার ৬৭০ জন কৃষককে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া প্রণোদনার অংশ হিসেবে শুধু রংপুর জেলার ৪০০ জন কৃষককে পেঁয়াজের বীজ ও সার প্রদান করা হবে। রংপুর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, এত বড় অংকের প্রণোদনা এর আগে কখনই রংপুরে দেয়া হয়নি। এবার প্রথম বন্যা এবং করোনাভাইরাসে এ অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য কয়েক দফায় বিপুল পরিমাণ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। প্রত্যেক কৃষক এক বিঘা জমির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় নির্দিষ্ট পরিমাণ বীজ ও সার সহায়তা পাচ্ছেন। তবে একজন কৃষক যেকোনো কর্মসূচির আওতায় শুধু একবারে সহায়তা পাবেন। কেউ যেন একের অধিক অথবা অকৃষক যাতে সরকারি সহায়তা না পান, এজন্য তা লক্ষ রাখা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধিতে এবার প্রথম শুধু রংপুর জেলার ৪০০ জন কৃষককে বীজ ও সার সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। উন্নয়ন গবেষক এবং রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক উমর ফারুক বলেন, আমরা আজো জানি না আমাদের প্রান্তিক কৃষকের প্রকৃত সংখ্যা কত। এছাড়া কৃষকের কোনো হালনাগাদ ও ডিজিটাল তালিকা আমাদের নেই। ফলে কখনো কখনো এ তালিকায় অকৃষক অন্তর্ভুক্ত হয়। যদি সরকারি বরাদ্দ ও প্রণোদনা প্রকৃত কৃষক, অবহেলিত, ক্ষতিগ্রস্ত ও বঞ্চিত কৃষকের হাতে পৌঁছে দিতে না পারি তবে ব্যাহত হবে প্রণোদনার উদ্দেশ্য। বাড়বে সরকারি ব্যয়। আমরা চাই প্রকৃত কৃষকের হাতে পৌঁছে যাক সরকারি সাহায্য। সবার আগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা প্রস্তুত ও ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ নিরূপণ করা আবশ্যক। রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব সরকার। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র এবং প্রান্তিক কৃষকরা যেন আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারেন, এজন্য বিনা মূল্যে বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসলে ব্যাপক আকারে বীজ ও সার প্রদান…




চুয়াডাঙ্গায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে ভারতীয় বুপ্রেনরফাইন ইনজেকশনসহ এক মাদক ব্যাবসায়ী আটক
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ (০৮-১০-২০) চুয়াডাঙ্গার নুরনগরের এরাঙ্গ বাদশাকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৮ অক্টোবর) সকালে চুয়াডাঙ্গা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে ৪৭ অ্যাম্পুল ভারতীয় ইনজেকশনসহ তাকে আটক করা হয়। আটককৃত এলাঙ্গ বাদশা (৩৮) চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নুরনগর গ্রামের মৃত সুলতান শেখের ছেলে। মাদকদ্রব্য…



ভেজাল কীটনাশক ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্ত রানীনগরের কৃষক
নওগাঁর রানীনগরে বাজারে আসল কোম্পানির মনোগ্রামসহ নকল কীটনাশক বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফসলে ভেজাল কীটনাশক ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক। ধানে পোকা দমনে কৃষক না বুঝে দোকান থেকে নকল কীটনাশক কিনে ফসলে ব্যবহার করছেন। এতে উপকারের পরিবর্তে উল্টো ক্ষতি হচ্ছে। একদিকে যেমন ফসলের ক্ষতি হচ্ছে অন্যদিকে আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইনতেফা কোম্পানি ‘বাতির’ নামে কীটনাশক নির্ধারিত দোকানগুলোর মাধ্যমে বাজারে বিক্রি করে। রানীনগর উপজেলায় দুই মাস থেকে ‘বাতির’ নামের কীটনাশক বাজারে নেই। কোম্পানির নির্ধারিত দোকানগুলোয় এ কীটনাশক না থাকলেও বাইরের কিছু দোকানে পাওয়া যাচ্ছে। কৃষকরা ধানের পোকা দমনে এ কীটনাশক স্প্রে করেন। কিন্তু কিছুতেই পোকা দমন সম্ভব হচ্ছে না। কৃষকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে নামেন মূল কোম্পানির প্রতিনিধিরা। দেখা যায়, বাজারে বিক্রি হওয়া কীটনাশকটি ইনফেতার নয়। কিন্তু মোড়ক হুবহু নকল করে তা বিক্রি করা হচ্ছে। আর কৃষকরা না বুঝে ওই নকল কীটনাশক কিনে প্রতারিত হয়েছেন। কোম্পানির পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর উপজেলার আবাদপুকুর বাজারে উপজেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় নকল ‘বাতির’ কীটনাশক বিক্রি করার দায়ে কীটনাশক ব্যবসায়ী লুত্ফর রহমানকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের কৃষক মুনছুর আলী বলেন, প্রায় আড়াই মাস আগে বাতির কীটনাশক ১০০ গ্রাম ওজনের একটি প্যাকেট কিনেছিলাম। ১৫-২০ দিন আগে আবারো কেনার জন্য আবাদপুকুর বাজারে গিয়ে অনেক খুঁজে একটা দোকানে পেয়েছিলাম। ১০০ গ্রাম ওজনের দাম ২৮০ টাকা। এছাড়া প্যাকেটের ভেতরে দানাদানা ভাব ছিল। সন্দেহ হওয়ায় সেটি আর নিইনি। যারা ওই দোকান থেকে বাতির কীটনাশক কিনেছেন, তারা সবাই প্রতারিত হয়েছেন। আবাদপুকুর বাজারের কীটনাশক ব্যবসায়ী লুত্ফর রহমান বলেন, ‘বাতির’ কীটনাশক আসল না নকল তা জানি না। তবে কোম্পানির লোক পরিচয় দিয়ে দোকানে সরবরাহ দিয়েছিলেন। পরে কোম্পানির আসল লোকজন প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালিয়ে কীটনাশকটি নকল বলে জব্দ করেন। তবে যারা ওই কীটনাশক সরবরাহ করে আসছিল, তারা আর বাজারে আসে না। ইনতেফা কোম্পানির এরিয়া ম্যানেজার আবু সাঈদ বলেন, গত দুই মাস থেকে কোম্পানির ওই কীটনাশক সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। কিন্তু তার পরও কিছু কিছু কীটনাশক ব্যবসায়ী ‘বাতির’ কীটনাশক বিক্রি করে আসছিলেন। কৃষকরা ওই কীটনাশক ব্যবহার করে উপকার পাচ্ছিলেন না বরং অভিযোগ আসছিলেন। এরপর আমরা বাজারে গিয়ে কীটনাশক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ‘বাতির’ কীটনাশকটি দেখি। সেটা নকল বলে প্রতীয়মান হয়। আমাদের কোম্পানির মনোগ্রামসহ সব কিছু নকল করা হয়েছে। কোম্পানির লোক পরিচয় দিয়ে যারা কীটনাশক সরবরাহ করতেন, তাদের একজনের নামও আমরা পেয়েছি। বিষয়টি কোম্পানিকে অবগত করা হয়েছে। রানীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে ভেজাল কীটনাশকের সত্যতা পাওয়া যায়। নকল কীটনাশক বাজারের বিক্রি হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে জরিমানাসহ কীটনাশক জব্দ করা হয়েছে। কতজন কৃষক এ ভেজাল কীটনাশক…
