হোয়াইট হাউজে ‘ঘুষের বিনিময়ে ক্ষমা’র তদন্তে মার্কিন কৌঁসুলিরা

ঘুষের বিনিময়ে ক্ষমা চেয়ে হোয়াইট হাউজে অর্থ সরবরাহের মতো এক অপরাধের তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্রের আইন মন্ত্রণালয়। ফেডারেল কোর্টে উপস্থাপিত তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে এ বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। খবর রয়টার্স।

গত মঙ্গলবার ইউএস ডিস্ট্রিক্ট জজ বেরিল হাওয়েল অতি সম্পাদিত এক অর্ডারে ওই ডকুমেন্ট প্রকাশ করেন। এটাকে তিনি ‘ব্রাইবারি ফর পারডন’ বা ঘুষের বিনিময়ে ক্ষমাবিষয়ক তদন্ত বলে অভিহিত করেছেন। এতে আরো বলা হয়েছে, ১৮ পৃষ্ঠার ওই ডকুমেন্টের প্রায় অর্ধেকটা মুছে ফেলা হয়েছে। প্রকাশ করা হয়েছে তার সামান্য অংশ। তাতে এ দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে খুব কমই বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এছাড়া এতে জড়িতদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

ওয়াশিংটনে ফেডারেল কৌঁসুলিরা বলেন, তারা ঘুষ গ্রহণের বড় রকমের একটি দুর্নীতির তথ্যপ্রমাণ পেয়েছেন। এতে প্রেসিডেন্টের ক্ষমা অথবা শাস্তি প্রশমনের বিনিময়ে কেউ কেউ উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ‘কন্ট্রিবিউশন’ প্রস্তাব করে থাকতে পারেন। এছাড়া বিচারক বেরিল হাওয়েল তার অর্ডারে বলেছেন, একটি ‘সিক্রেট লবিং স্কিম’ নিয়ে তদন্ত করছেন কৌঁসুলিরা। এক্ষেত্রে অজ্ঞাত দুই ব্যক্তি হোয়াইট হাউজের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে লবিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন। এক্ষেত্রে ‘লবিং ডিসক্লোজার অ্যাক্ট’ আইন মানা হয়নি। তবে আইন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, সরকারি কোনো কর্মকর্তা এ তদন্তের টার্গেটে নেই অথবা ছিলেনও না। এক আইনজীবী এবং তার মক্কেলদের সুনির্দিষ্ট ই-মেইল চেক করতে মন্ত্রণালয়টি এরই মধ্যে বিচারক বেরিল হাওয়েলের কাছে অনুমতি প্রার্থনা করেছে। তবে ওই আইনজীবী এবং ক্লায়েন্টদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। আগস্টে এ অনুরোধ অনুমোদন করেছেন বেরিল হাওয়েল।

কৌঁসুলিরা বলছেন, এ যোগাযোগের সঙ্গে যুক্ত থাকার সন্দেহে তারা তিনজন অজ্ঞাত ব্যক্তির মুখোমুখি হওয়ার পরিকল্পনা করেন এবং তাদের তদন্ত শেষ করেন। বেরিল হাওয়েলের নির্দেশ অনুযায়ী সরকারি অনুসন্ধানকারীরা তাকে জানান, তারা ৫০টিরও বেশি ডিজিটাল মিডিয়া ডিভাইস জব্দ করেছেন। এর মধ্যে আছে আইফোন, আইপ্যাড, ল্যাপটপ, থাম্ব ড্রাইভ, কম্পিউটার এবং এক্সটারনাল হার্ড ড্রাইভ।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের অধীনে ফেডারেল ক্রাইমের দায়ে অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দেয়ার অধিকার রাখেন প্রেসিডেন্ট। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে তার সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে যে তদন্ত হয়েছে, তাতে তিনি দুবার এফবিআইয়ের কাছে মিথ্যা বলার কথা স্বীকার করেছেন। তাকে ক্ষমতার মেয়াদের শেষের দিকে এসে ক্ষমা করে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি এ সময়ে যাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন বা দিচ্ছেন, তার মধ্যে মাইকেল ফ্লিন প্রথম। বিচারক বেরিল হাওয়েলের নির্দেশ অনুযায়ী, আইন মন্ত্রণালয় সম্প্রতি তাকে বলেছে, তারা তদন্তের তথ্য প্রকাশ করতে চায় না। কারণ, এতে অজ্ঞাত মানুষের নাম রয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে এখনো অভিযোগ গঠন করা হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *